ব্রেকিং নিউজ
  • বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যা আলাপ হলো বাইডেন-মোদির

ব্যতিক্রমী আয়োজনে পিপল এন টেক এলামনাইদের পুনর্মিলনী 

ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশিত: ৩০ অক্টোবর ২০২২, ১২:১০
...
‘নো মোর অড জব’ শ্লোগান নিয়ে প্রতিষ্ঠিত পিপল এন টেক এলামনাইদের প্রথম এবং ব্যতিক্রমী পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হলো। গত ২৩ অক্টোবর রোববার নিউইয়র্কের উডসাইডস্থ কুইন্স প্যালেসে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সাফল্যের কথা জানালেন পিপল এন টেক এলামনাইরা। শেয়ার করলেন একে অপরের অভিজ্ঞতার কথা। তাদের অভিজ্ঞতার নানান কথা অবাক করে দেয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত দর্শক-শ্রোতাদের। বিশেষ করে ‘ল্যান্ড অব অপুরচনিটির দেশ’ এই মার্কিন মল্লুকে যে কতো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তার কথা তুলে ধরে আশার আলো শুনালেন অনেকেই। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ-কে অভিহিত করলেন ‘স্বপবাজ আর স্বপ্ন পূরণের মানুষ’ হিসেবে। বক্তারা বলেন পিপল এন টেক হচ্ছে আমেরিকায় ভাগ্য পরিবর্তনের সিঁড়ি। খবর ইউএনএ’র।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন আরটিভি’র সিইও সৈয়দ আশিকুর রহমান। আর মধ্যমনি ছিলেন পিপলএনটেক’র প্রতিষ্ঠাতা-সিইও এবং ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির চ্যান্সেলর আবুবকর হানিপ। ছিলেন পিপলএনটেক’র প্রেসিডেন্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএফও ফারহানা হানিপ। তাদের ঘিরে জমেছিলো প্রতিষ্ঠানটির এলামনাইদের মিলনমেলা। এতে নিউইয়র্ক, ভার্জিনিয়া, নিউজার্সী ও পেনসিলভেনিয়া ক্যাম্পাস/কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা সহ নিউইয়র্ক ছাড়াও ট্রাইষ্টেটের বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন। কমিউনিটির সর্বস্তরের বিশিষ্টজনদেন উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি বিভিন্ন পরিবেশে রূপ নেয়।

উল্লেখ্য, পিপল এন টেক প্রতিষ্ঠাতা ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ নানা চড়াই-উৎরাই পাড়ি দিয়ে নিজে যেমন প্রতিষ্ঠিত, তেমনী হাজারো বাংলাদেশীসহ ভিন্নদেশীদেরও ‘প্রফেশনাল জব’-এ প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা করেছেন। ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ আমেরিকায় তার ব্যক্তিগত জীবনে মোহনীয় উচ্চ বেতনের চাকুরি ছেড়ে দেড় যুগ পূর্বে প্রতিষ্ঠা করেন ‘আইটি বিষয়ক প্রশিক্ষণ সেন্টার-পিপল এন টেক’। দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ৮হাজার শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকুরি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন নামী-দামী কোম্পানীতে/প্রতিষ্ঠানে। সর্বশেষ আরো বৃহৎ পরিকল্পনায় আবু হানিপ প্রতিষ্ঠা করেছেন ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’। তিনি এই প্রতিষ্ঠনের চ্যান্সেলর। এই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এখন সহস্রাধিক। যার সিংহভাগই বাংলাদেশ থেকে স্টুডেন্ট ভিসায় আসা শিক্ষার্থী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষ অতিথি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার আবু হানিপ ও পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ। পিপলএনটেকের অন্যতম পরিচালক ড. শফি চৌধুরীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ এন মজুমদার, সৈয়দ মোস্তফা আল আমিন রাসেল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন কয়েকজন এলামনাই।

কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম বলেন, আপনাদের সাফল্য আমাদের মুগ্ধ করে এবং বাংলাদেশীদেরকে গৌরবান্বিত করে। ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ আমেরিকায় যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তা অনেককেই উৎসাহিত করবে, অনুপ্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশী ডায়াসপোরার অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রে তাদের পদচিহ্ন রাখতে সক্ষম হয়েছেন। আবুবকর হানিপ তাদের একজন।

সৈয়দ আশিকুর রহমান পিপলএনটেকের সাফল্যেও প্রশংসা করে বলেন, এই প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিকে সামনে এগিয়ে নিতে আমাদের সবার সহযোগিতা থাকবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে এদেশে পড়তে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপও শোনান তার জীবনের গল্প, সংগ্রামের কথা, সাফল্যেও কথা। যে গল্প/কথা ছিলো সকলের জন্যই অনুপ্রেরণার। আবু হানিপ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে সুপ্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিষ্ঠানে দু’লাখ ডলার বেতনের চাকরি করতেন। কিন্তু ভেবেছিলেন একার উন্নতি শুধু নয়, আরও মানুষ যাতে একইভাবে তাদের জীবনটিকে পাল্টে দিতে পারে সেই প্রচেষ্টাই নিতে হবে। তার সেই ভাবনা থেকেই আজ থেকে ১৮ বছর আগে ২০০৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পিপলএনটেক। তিনি জানান, মজার কথা হচ্ছে শুরুটা হয় মাত্র একজন ছাত্র দিয়ে। সেই ছাত্রটি যখন কোর্স সম্পন্নের পর আমেরিকান একটি প্রতিষ্ঠানে মোটা মাইনের চাকরি পেলেন। তখন তা জানাজানি হওয়ার পর নতুন ছাত্র আসতে শুরু করলো। এরপর আর পেছনে তাকে ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে পিপল এন টেকের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। আর এই সময়ের মধ্যে ৭ হাজারের বেশি বাংলাদেশীকে আইটি প্রশিক্ষণে প্রশিক্ষিত করে ‘প্রফেশনাল জব’ পাইয়ে দিয়েছে পিপলএনটেক। যারা এখন স্বাচ্ছন্দে জীবন যাপন করছেন। শুধু তাই নয়, পিপল এন টেকের এলামনাইরা নিজেদের পাশাপাশি গড়ে তুলছেন নিজেদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য গড়ে তুলেছেন আর্থিক নিশ্চয়তা। পাশাপাশি তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে বাংলাদেশের অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখতে পারছেন। আবু হানিপ বলেন, এসবের পিছনে দেশপ্রেমই বড়।

অনুষ্ঠানে ইঞ্জিনিয়ার আবুবকর হানিপ ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ (ডব্লিউইউএসটি) প্রতিষ্ঠার কথা তুলে ধরে বলেন, এটি পিপলএনটেকেরই একটি ধারাবাহিকতা এবং তার দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। আর আমেরিকার মূলধারায় বাংলাদেশী কমিউনিটিকে এগিয়ে নিতে শিক্ষাকেই সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিৎ।

পিপলএনটেকের প্রেসিডেন্ট ফারহানা হানিপ বলেন, আমাদের এলামনাইরাই আমাদেও প্রতিষ্ঠানের প্রাণ। তাদের সাফল্যই আমাদের সাফল্য। তাই সবাইকে নিয়েই আমরা আমাদের সাফল্য উদযাপন করতে চাই। যদিও এলামনাইরা এখন আর ক্যাম্পাসে নেই কিন্তু তারা সকলেই আমাদের অন্তরে রয়েছেন। কেউ কেউ এখন উচ্চ পর্যায়ে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য আমরা গর্বিত। ডব্লিউইউএসটিকে সফল করে তুলতে কিনি পিপলএনটেকের এলামনাইদের পাশে থাকার আহবান জানান।
পিপল এন টেক-এর এলামনাই ড. শফিউল হামিদ। অনুষ্ঠানে জানালের তার অভিজ্ঞতার কথা।

সর্বশেষ