ইমিগ্রেশন ও আপনি বিভাগ থেকে আপনাদের সবার জন্য রইলো আমাদের ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকার স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। আশা করি আপনারা সবাই সুস্থ আছেন। আপনাদের মঙ্গলকর জীবন আমাদের কাম্য। আর তাই ইমিগ্রেশন বিষয়ে যেকোন প্রয়োজনে আমরা আপনাদের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত। এই বিভাগ আপনাদের জন্য। এ কারণে এই বিভাগের মাধ্যমে আপনারা এতটুকু উপকৃত হলে আমরা আনন্দিত হবো। প্রতি সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও আপনাদের পাঠানো চিঠিগুলো আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। আপনাদের পাঠানো চিঠি থেকে পর্যায়ক্রমে আমরা তার উত্তর দিয়ে থাকি।
আগস্ট ২০২৪ ভিসা বুলেটিন: ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব ষ্টেট (ডিওএস) আগষ্ট ২০২৪ এর ভিসা বুলিটিন প্রকাশ করেছে। নীচে আগস্ট ২০২৪ এর পারিবারিক ভিত্তিতে ভিসার প্রাপ্যতা উল্লেখ করা হলো। ‘ফাইনাল একশন ডেট’ বলতে সেই ডেট কে বোঝানো হয় যখন ইউএসসি আইএস। ডিওএস পারিবারিকভাবে আবেদনকারীদের আবেদনের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানায়। আপনাদের প্রায়োরিটি তারিখ হবে ঐ তারিখের পূর্বে। ২০২৪ এর ভিসা বুলেটিন পর্যালোচনা করে দেখা যাচ্ছে যে পারিবারিক ভিত্তিক ক্যাটাগরিতে অল্প কিছুটা অগ্রগতি হয়েছে।
ফ্যামিলি স্পন্সর অগ্রাধিকার: প্রথম:— (এফ ১) ইউএস সিটিজেনদের অবিবাহিত পুত্রকন্যা— অক্টোবর ২২, ২০১৫।
দ্বিতীয়: পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের স্পাউস (স্বামী/ স্ত্রী), সন্তান এবং অবিবাহিত পুত্রকন্যা।
এ, (এফ ২ এ) পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের স্বামী/স্ত্রী এবং ২১ নিম্ন বয়সী সন্তান। নভেম্বর ১৫, ২০২১।
বি, (এফ ২ বি) পার্মানেন্ট রেসিডেন্টেদের অবিবাহিত পুত্র কন্যা (২১বছর বয়সী অথবা তদুর্ধ)। মে ০১, ২০১৬।
তৃতীয়: (এফ ৩) ইউএস সিটিজেনদের বিবাহিত পুত্র কন্যা: এপ্রিল ০১, ২০১০।
চুতুর্থ: (এফ ৪) প্রাপ্ত বয়স্ক ইউএস সিটিজেনদের ভাই—বোন: আগস্ট ০১, ২০০৭।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চাইলে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
ইউএসসিআইএস এর ঘোষিত নতুন ফি সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য ইউএসসিআইএস—এর ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন।
নিউইয়র্ক থেকে এম চৌধুরীর প্রশ্ন:আমি একজন ইউএস সিটিজেন। আমার করা আবেদনে আমার স্ত্রী গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে এদেশে এসেছে। তারপর থেকে সে এখানেই অবস্থান করছিল। কয়েকমাস আগে সে বাংলাদেশে তার বাবার গুরুতর অসুস্থতার খবর পেয়ে বাবার কাছে গিয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, সে তার বাবা—মায়ের একমাত্র সন্তান। তারপর থেকে সে প্রায় পাঁচ মাসের মত বাংলাদেশে তার বাবার কাছে রয়েছে। সে যখন বাংলাদেশে যায় তখন সে প্রেগন্যান্ট ছিলো। ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে এবং তার অনুমতি সাপেক্ষে সে বাংলাদেশে ভ্রমণ করেছিলো। ডাক্তার তাকে নির্ধারিত তারিখের মধ্যে ফিরে আসতে বলেছিলেন। কিন্তু নির্ধারিত তারিখের আগে সে অসুস্থ হয়ে পডলে জটিল অবস্থায় সে সন্তান প্রসব করে। এই অবস্থায় ডাক্তার তাকে আরো দুই মাস ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে।
এব্যাপারে আমি খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। আমি এই বিভাগের প্রায় একজন নিয়মিত পাঠক। বেশ কিছুদিন আগে প্রায় আমাদের মত একটি ঘটনা এই বিভাগে পড়েছিলাম। আপনার কাছে আমার জানার বিষয় হচ্ছে আমার স্ত্রী বাংলাদেশের ছয় মাসের বেশি সময় অবস্থান করতে পারবে কিনা? আর আমাদের বেবির কি অবস্থা হবে? বাংলাদেশ বেরিয়ে সে এখানে আসতে পারবে কি না। আমি কি এখান থেকে বেবির গ্রীন কার্ড এর জন্য আবেদন করতে পারব কিনা? আর জানার বিষয় হচ্ছে কিভাবে আমরা এই জটিল সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
মাহিম চৌধুরীর প্রশ্নের উত্তর:গ্রীন কার্ডধারীরা ইউএস এর বাইরে গিয়ে তাদের স্ট্যাটাসের ক্ষতি না করে এক বছর সময় পর্যন্ত অবস্থান করতে পারে। ছয় মাসের বেশি অনুপস্থিতি কিন্তু এক বছরের কম এই অনুপস্থিতি হলে ইউএস রেসিডেন্সির কন্টিনিউটি ভঙ্গ হবে। যা আপনার স্ত্রী সিটিজেনশিপে প্রভাব ফেলবে। আপনার স্ত্রীর বাংলাদেশের অবস্থান যদি ছয় মাসের বেশি হয়, ইমিগ্রেশন অফিসার জিজ্ঞেস করতে পারে এদেশের বাইরে অবস্থান সম্পর্কে এবং এ ব্যাপারে রেসিডেন্সি ধরে রাখার ইচ্ছা সম্পর্কে।
আপনার স্ত্রী ছয় মাসের বেশি সময় বাংলাদেশে অবস্থান করতে পারবেন যদি বৈধ এবং যথার্থ কারণ থাকে এই অবস্থানের পেছনে।
আপনার অপর প্রশ্নের ব্যাপারে বলছি যে, আপনার স্ত্রী বেবির গ্রিন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন না। আর আপনি যদি ইউএস সিটিজেন হন, তবে আপনার এই নতুন জন্মগ্রহণকরা বেবি ইউএস সিটিজেন হয়ে আসবে। এজন্য আপনাকে তার ইউএস পাসপোর্ট এর জন্য আবেদন করতে হবে ঢাকা ইউএস অ্যাম্বাসিতে। তার ভিসা অথবা গ্রীন কার্ডের জন্য আবেদন করতে হবে না। মা—বাবার কেউ একজন যদি ইউএস সিটিজেন হন, তবে সন্তান ইউএস সিটিজেন হিসেবে বিবেচিত হবে।
কিন্তু গ্রীন কার্ডধারীর কোন সন্তান ইউএস এর বাইরে জন্মগ্রহণ করলেই সে সন্তান গ্রিন কার্ডধারী হিসেবে বিবেচিত হবে না। বরং সন্তানটি যখন ইউএসএ প্রবেশ করবে, তখন পোর্ট অব এন্টি্রতে কর্তব্যরত কর্মকর্তা বৈধ পার্মানেন্ট রেসিডেন্টদের ফরম (আই—১৮১) দেবেন। যে ফর্মটি প্রমাণ করবে যে সে বৈধভাবে প্রবেশ করেছে। বেবিটি তখন বৈধ প্রবেশের ভিত্তিতে গ্রিন কার্ড লাভ করবে। এটি জানা থাকা জরুরি যে, মা তার প্রথম প্রবেশের সময় বেবিকে তার সঙ্গে আনতে পারবেন। তবে সন্তানটিকে অবশ্যই জন্মের দুই বছরের মধ্যে আনতে হবে। এ ব্যাপারে আপনাদের জন্য আমাদের বিশেষ পরামর্শ হচ্ছে ইমিগ্রেশন বিষয়ে যে কোন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে অভিজ্ঞ ইমিগ্রেশন ও অ্যাটর্নির সাথে প্রয়োজনবোধে আলোচনা করা ভালো।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ইউএস ডিপার্টমেন্ট অফ ষ্টেটের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন।
ইমিগ্রেশন বিষয়ে যে কোন প্রয়োজনে আমাদের সাথে যোগাযোগের ঠিকানা: ২২৫ ব্রডওয়ে (৩৮ তলা), নিউইয়র্ক ১০০০৭। ফোন: ২১২—৫১৩—৭৪৭৪ ফ্যাক্স: ৯১৪—৪৬২—৩৯৯০ ই—মেইল:kazmiandreeves@gmail.comএ লিখে ই—মেইল করলে অবশ্যই ‘বাংলা পত্রিকার জন্য’ কথাটি উল্লেখ করবেন।
অনুবাদ: হুসনে এ. বেগম।