ব্রেকিং নিউজ
  • বাংলাদেশ প্রসঙ্গে যা আলাপ হলো বাইডেন-মোদির

‘টাকা দিয়ে পদ পাওয়া নেতারা দুর্দিনে মাঠে থাকেনা’

বাংলা পত্রিক ডেস্কঃ
প্রকাশিত: ২৬ জুলাই ২০২৪, ১২:০৭
...

আওয়ামী লীগে পদ-বাণিজ্য বন্ধের জোর দাবি উঠেছে। রাজধানীর থানা-ওয়ার্ড পর্যায়ের দলীয় একাধিক নেতা এ দাবি জানিয়ে বলেন, সম্মেলনের পর নতুন করে পদ নিতে গেলে অনেকেরই টাকা লাগছে। টাকা দিলেই পদ পাওয়া যাবে—এটা যেন এখন ওপেন সিক্রেটে পরিণত হয়েছে। আর যেসব নেতা টাকায় পদ কিনেন তারা মাঠে নামবেন কেন? আর টাকা দিয়ে বেশির ভাগ পদ তো বাগিয়ে নিচ্ছেন হাইব্রিড, সুবিধাভোগী, বিতর্কিত ও স্বাধীনতাবিরোধী মতাদর্শীরা। দলের ক্রান্তিকালে এরা তো মাঠে থাকবে না—এটাই স্বাভাবিক। মনে রাখবেন দুর্দিনে ত্যাগী ও সত্যিকারের আদর্শ ধারণকারী নেতাকর্মীরাই ঝুঁকি নেন। সুবিধাবাদী নেতাদের খুঁজে পাওয়া যায় না। যা কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা চলাকালে চোখে আঙুল দিয়ে আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে।’

 আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সংকট নিয়ে গত তিন দিনের পর্যালোচনা সভায় তৃণমূলের নেতারা এ কথা বলেন। দীর্ঘদিন পর ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা-ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত কমিটির তালিকা দুই সপ্তাহ আগে জমা দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় দপ্তরে। অভিযোগ উঠেছে, কমিটিতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, মাদক কারবারি, ফুটপাত-জমি দখলবাজ, ক্যাসিনোকাণ্ডে জড়িত ও হত্যা মামলার আসামিরাও স্থান পেয়েছে। একটি পদের জন্য ১০ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত নেতার পকেটে ঢুকেছে। পদ বাগাতে নেতাকে দামি গাড়ি উপহারেরও ঘটনা ঘটেছে। আবার মোটা অঙ্কের টাকা দিয়েও বনিবনা না হওয়ায় ছিটকে পড়েন অনেকে। এমনকি  মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রস্তাব করা হয়েছে বিএনপি-জামায়াত সমর্থকের নামও। এছাড়া ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে শীর্ষ নেতার সন্তানসহ স্বজনের নামও তালিকায় ঠাঁই পেয়েছে। সূত্র জানায়, পর্যালোচনা সভায় এ প্রসঙ্গটি তুলে ধরে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এই প্রস্তাবিত কমিটির কারণেই দলের অনেকেই সহিংসতা মোকাবিলায় মাঠে নামেননি। এ কারণে থানা-ওয়ার্ডের প্রস্তাবিত কমিটি আর কখনো আলোর মুখ দেখবে না।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা মোকাবিলায় ব্যর্থ হওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বেশ কিছু এলাকা চিহ্নিত করেছে আওয়ামী লীগ। এসব এলাকার সংসদ সদস্য, দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে ধারাবাহিক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা ১১, ১৪, ১৫, ১৬ আসনের দলীয় সংসদ সদস্য, এসব এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ও দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে পর্যালোচনা সভা করেন ওবায়দুল কাদের। তেজগাঁওস্থ ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে হট্টগোলের ঘটনাও ঘটেছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে সহিংসতা প্রতিরোধে ‘কে মাঠে ছিল, আর কে মাঠে ছিল না’ সেগুলো নিয়েই সভায় উচ্চবাক্য ও ‘চিল্লাচিল্লি’ হয় বলে বৈঠক সূত্র জানিয়েছে। এক পক্ষ অপর পক্ষকে মাঠে না থাকার অভিযোগ করার পরিপ্রেক্ষিতে এই হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। 

সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বি এম মোজাম্মেল হক, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী প্রমুখ। সভায় বিভিন্ন আসনের সংসদ সদস্য, থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলরা বক্তব্য রাখেন। নেতারা যখন বক্তব্য দেন, কর্মীরা তখন হট্টগোল শুরু করেন। হট্টগোলের কারণ জানতে চাইলে একাধিক নেতা বলেন, কোটা আন্দোলনের সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে দুষ্কৃতকারীরা সহিংসতা চালায়। এ সময় যারা প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেননি, তারা যখন নিজের অবস্থান তুলে ধরে নিজেকে জাহির করেন, তখন সেই এলাকার নেতাকর্মীরাই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। নেতাকর্মীদের হট্টগোল দেখে অনেক নেতাকেই বক্তব্য থেকে বসিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা।

জানা গেছে, পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সারোয়ার হোসেন, মিরপুর ৯৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিনসহ বেশ কয়েক জন নেতা যখন বক্তব্য দিতে গিয়ে নিজের মাঠে থাকার কথা বলেন, তখন উপস্থিত অনেকে প্রতিবাদ করেন। নেতাকর্মীদের হট্টগোলের কারণে বক্তব্য থেকে তাদের বসিয়ে দেওয়া হয়। থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের তিন নেতা বলেন, টাকা দিয়ে পদ বিক্রি বন্ধ করলে সাংগঠনিক সংকট বন্ধ হবে। আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, মিরপুরের সংসদ সদস্য ইলিয়াস মোল্লা দেশের বাইরে অবস্থান করেছিলেন। তিনি দেশে না থাকলেও তার পক্ষে সেই এলাকার এক কাউন্সিলর গুণগান করতে শুরু করেন। তখন নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। বলতে থাকেন যে, তিনি (ইলিয়াস মোল্লা) তো দেশেই নেই। তার আবার অবস্থান কী? এসব বিষয়ে আওয়ামী লীগের এক সিনিয়র নেতা বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নেতাদের কাছ থেকে বিবরণ শুনতে কয়েক জনকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু বক্তব্য দিতে এসে অনেকে নিজের গুণগান গাইতে শুরু করেন। আবার অনেকে মাঠে ছিলেন না, তাদের বক্তব্য দিতে দেখে অনেকে উত্তেজিত হয়ে যান। তখন তাদের আমরা বসিয়ে দেই।

মহানগর ও যুবলীগের দুই নেতার বাগিবতণ্ডা :জানা গেছে, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় পর্যালোচনা সভায় থানা ও ওয়ার্ডের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শীর্ষ এক নেতা ও যুবলীগের শীর্ষ এক নেতাও  দ্বন্দ্বে জড়ান। পুরো সময় দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে এক পক্ষকে হেয় করে অন্য পক্ষ স্লোগান দিতে থাকে। পরে কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি সাময়িক সময়ের জন্য শান্ত হলেও থেমে থেমে চলে হট্টগোল। একপর্যায়ে  ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের শীর্ষ ঐ নেতা যুবলীগের শীর্ষ নেতাকে বেয়াদব বলায় তিনি উচ্চ স্বরে তেড়ে এসে কথা বলতে থাকেন। এই পর্যায়ে আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা দুজনকে থামিয়ে মিলিয়ে দেন। সভা অসমাপ্ত রেখে আলাদা কক্ষে ঐ দুই নেতাকে নিয়ে মিলিয়ে দেন কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা সূত্র জানায়, মতবিনিময় সভার শুরুতে কাফরুল থানার ৯৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক আমির উদ্দিন বক্তব্য দেন। তিনি তার এলাকার সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের পক্ষে বক্তব্য দেন। তিনি জানান, কামাল আহমেদ মজুমদারের নির্দেশে তিনি মাঠে ছিলেন। এমন বক্তব্যের পরই নেতাকর্মীরা হট্টগোল শুরু করেন। ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের ভাষ্য, কামাল আহমেদ মজুমদার ও তার অনুসারীরা কেউ ঐ এলাকায় ছিলেন না। পক্ষে-বিপক্ষে স্লোগান চলতে থাকে। এ সময় মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি মানা করলেও যে যার অবস্থাান থেকে চিত্কার করতে থাকেন।

পরে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম হুঁশিয়ারি দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর বক্তব্য দেন কাফরুল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল মোস্তফা। তিনি তার বক্তব্যে দলের সমন্বয়হীনতা এবং দলের থানা ওয়ার্ডের কমিটি না থাকার কথা বলেন। এই পরিস্থািতি থেকে উত্তরণের জন্য দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। এ সময় উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি তাকে থামিয়ে দেন। তিনি সবাইকে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কথা বলার জন্য অনুরোধ করেন।

পল্লবী থানার ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আশিকুল ইসলাম আশিক বলেন, সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে দলের এই অবস্থা থেকে আবার ঘুরে দাঁড়াবে। একই কথা বলেন ঢাকা মহানগর উত্তরের ৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজউদ্দিন বাপ্পি। পরে নিজ এলাকায় দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মাঠে থাকার দাবি করেন পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার আলম। এমন বক্তব্যে উপস্থিত নেতাকর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। কেউ কেউ বলতে থাকেন, আপনি নিজেই মাঠে ছিলেন না। এ সময় তাকে উদ্দেশ্য করে ভুয়া ভুয়া স্লোগান দিতে শোনা যায়। ফের পক্ষে-বিপক্ষে স্লোগান দিতে দেখা যায়। এমন অবস্থায় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম সবাইকে চুপ থাকার অনুরোধ করেন এবং জানিয়ে দেন এই পরিবেশে আর আলোচনা নয়, প্রয়োজনে প্রতিটি থানা-ওয়ার্ড নিয়ে পৃথকভাবে বসা হবে।

পরে সভা সমাপ্ত ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আপনারা কারা মাঠে ছিলেন আর কারা মাঠে ছিলেন না, আমাদের কাছে সব তথ্য আছে। আপনারা দলের পদে থেকে ঘরে বসে থাকবেন? দলের খারাপ সময়ে নিজেকে লুকিয়ে রাখবেন? তা হতে পারে না। যারা মাঠে ছিলেন না, তাদের তালিকা হচ্ছে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তালিকা ধরে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সভায় উত্তর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আজকের সভা করেছি। কিন্তু আপনাদের যে উপস্থিতি, তাতে আমাদের ইচ্ছার প্রতিফলন হয়নি। আমরা আরো উপস্থিতি আসা করেছিলাম।’ এ সময় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। পরে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের নিয়ে সভাস্থাল ত্যাগ করেন তিনি।

গতকালের পর্যালোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, ‘নাশকতাকারীরা এখনো ঘাপটি মেরে বসে আছে। তারা আরো খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। বিএনপি-জামায়াত সারি সারি লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতা নিতে চায়।’ সভার শুরুতে ওবায়দুল কাদের সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং আহতদের প্রতি সহানুভূতি জানান। সহিংসতার ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের দায়িত্ব প্রধানমন্ত্রী নেবেন বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের তদন্ত করে বিচার করতে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সবাইকে বিচারের আওতায় আনা হবে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করে বিএনপি-জামায়াত তাদের পরিচিত আগুন-সন্ত্রাস করেছে, এতে দেশের অর্জন ধংসস্তূপে পরিণত করতে চেয়েছে। বিএনপি সারি সারি লাশের ওপর দাঁড়িয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল।

নিহতদের স্মরণে আজ আওয়ামী লীগের দোয়া কর্মসূচি :সাম্প্রতিক সহিংসতায় নিহতদের স্মরণ ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দেশব্যাপী সব মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত করবে আওয়ামী লীগ। বৃহস্পতিবার বিকালে দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, সম্প্রতি ঢাকাসহ সারা দেশে বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় নিহত শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের আত্মার মাগফিরাত এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আজ শুক্রবার বাদ জুমা সারা দেশে সব মসজিদে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে আগামী রবিবার দেশের মন্দির, মঠ, গির্জা ও প্যাগোডাসহ সব ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হবে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসমূহের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের উক্ত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সাংগঠনিক নির্দেশনা প্রদান করেছেন।

এদিকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং থেকে বলা হয়, টোটাল শাটডাউন আন্দোলন চলাকালীন ব্যাপক অগ্নিসন্ত্রাস, নাশকতার কারণে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন তাদের প্রতি শোক জ্ঞাপন ও বিদেহী আত্মার মঙ্গল কামনা এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করে আগামী রবিবার দেশের সব মন্দির, প্যাগোডা ও গির্জায় সুবিধামতো সময়ে প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হবে। সরকারের পক্ষ থেকে করা হবে।

এ দিকে দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউস্থ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত নিন্ম-আয়ের মানুষদের মধ্যে খাদ্যবিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দেন ওবায়দুল কাদের। এ সময়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি জামায়াতের টার্গেট শেখ হাসিনার সরকারের পতন। আজকে যে পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে। শত্রুরা আড়ালে-আবডালে আরো প্রস্তুতি নিয়ে আক্রমণ করতে পারে। সাহস করে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

মাঠে না নামায় ভেঙে দেওয়া হলো আওয়ামী লীগের ২৭টি ইউনিট
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ায় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিট আওয়ামী লীগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দীর্ঘ সময় মোহাম্মদপর সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত ঢাকা-১৩ আসনের তিন থানা ও ওয়ার্ড নেতাদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। বৈঠক সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সভায় ঢাকা-১৩ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ ফজলুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক রানা, স্থানীয় কাউন্সিলর, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্র জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের অন্তর্গত মোহাম্মদপুর, আদাবর ও শেরেবাংলা নগর থানার ২৭টি ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকরা আন্দোলন মোকাবিলায় সরাসরি অংশ নেননি বলে অভিযোগ ওঠে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এসব ইউনিটের কমিটি ভেঙে ফেলা হয়েছে।

সর্বশেষ

advert

সর্বশেষ