সৌদি আরবকে বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগের আহ্বান প্রধান উপদেষ্টার
প্রধান উপদেষ্টার গণভবন পরিদর্শন, দিলেন জাদুঘর নির্মাণের নির্দেশনা
সৌদি রাষ্ট্রদূতের সাথে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ
আয়কর নিয়ে যে সুখবর দিলেন প্রধান উপদেষ্টা
যে কারণে নির্বাচনে ভরাডুবি ঘটেছিল কবি কাজী নজরুল ইসলামের
বাংলা পত্রিকা ডেস্ক প্রকাশিত: ৬ জানুয়ারি ২০২৪, ১৭:০১
ব্রিটিশ আমল থেকেই আমাদের দেশের কবি-লেখকেরা যুক্ত ছিলেন রাজনীতির সঙ্গে। তবে ভোটের রাজনীতিতে খুব কম লেখকই অংশ নিয়েছেন। মোহাম্মদ আকরম খাঁ, সৈয়দ আবুল মনসুর আহমদ, অধ্যাপক শাহেদ আলীসহ অল্প কয়জন লেখক বিভিন্ন সময় নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। কিন্তু বিফলের তালিকাটা লম্বা। আর এ তালিকায় ওপরের দিকে আছে কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাম।
ঢাকা বিভাগ থেকে আইনসভায় দুজন মুসলিম প্রতিনিধির কোটা ছিল। কংগ্রেস থেকে মনোনয়ন নিয়ে ১৯২৬ সালে বর্তমান ঢাকা, ফরিদপুর, বাকেরগঞ্জ ও বৃহত্তর ময়মনসিংহ নিয়ে গঠিত একটি আসন থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছিলেন নজরুল। তাঁর ধারণা ছিল, বাংলার মানুষ যেভাবে তাঁকে ও তাঁর কবিতা ভালোবাসে, নির্বাচনে তিনি বিপুল ভোটে জয়ী হবেনই। ফরিদপুরের এক পীরের কাছ থেকে একটা ফতোয়া লিখেও নিয়ে এসেছিলেন, যাতে লেখা ছিল, সবাই যেন তাঁকে ভোট দেয়। জরুলের নির্বাচনে মাঠে ছিলেন কবি জসীমউদ্দীনও। নজরুল তাঁকে বলেছিলেন, ‘জসীম, তুমি ভেবো না। নিশ্চয়ই সবাই আমাকে ভোট দেবে। ঢাকায় আমি শতকরা ৯৯টি ভোট পাব। তোমাদের ফরিদপুরের ভোট যদি কিছু পাই, তাহলেই কেল্লাফতে। নির্বাচিত আমি তো হবই; নির্বাচিত হলে মাঝে মাঝে আমাকে দিল্লি যেতে হবে। তখন তোমরা কেউ কেউ আমার সঙ্গে যাবে।’
কিন্তু মাঠের রাজনীতি আর ভোটের হিসাব তো ভিন্ন। কাজ করতে গিয়ে খরচ নিয়ে প্রথমেই বিপাকে পড়লেন বিদ্রোহী কবি। নির্বাচন করতে কেমন টাকা লাগে, সে ব্যাপারে তাঁর কোনো ধারণা ছিল না। পার্টির পক্ষ থেকে বিধানচন্দ্র রায় তাঁকে ৩০০ টাকা দিয়েছিলেন। এর বাইরে তেমন কোনো বাজেট ছিল না তাঁর।
নির্বাচনী প্রচারণার জন্য ঢাকার বেচারাম দেউড়ির ৫২ নম্বর বাড়িতে পীর সৈয়দ শাহ মোহাম্মদ ইউসুফ কাদেরীর আস্তানায় বেশ কিছুদিন অবস্থান করেছিলেন নজরুল। ফরিদপুরেও মাঠপর্যায়ে কাজ করেছিলেন কয়েক দিন। কিন্তু বাজেট–স্বল্পতায় নির্বাচনী এলাকার সবখানে যেতে পারেননি।
ভোটে নজরুলের ভরাডুবি ঘটে। ১৮ হাজার ১১৬ ভোটের মধ্যে মাত্র ১ হাজার ৬২টি ভোট পেয়ে পাঁচ প্রার্থীর মধ্যে চতুর্থ হন তিনি। তাঁর জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছিল। নজরুলের পরাজয়ের পেছনে আরও অনেক কারণের সঙ্গে বাজেট স্বল্পতাও ছিল একটি কারণ।
সূত্র: গোলাম মুরশিদের লেখা নজরুল–জীবনী বিদ্রোহী রণক্লান্ত; প্রকাশক: প্রথমা প্রকাশন