জার্মানিকে হারিয়ে দিলো জাপান, ১৬ বছরে সবচেয়ে বাজে শুরু ক্রোয়েশিয়ার


প্রকাশিত: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০০:১১
...

৭৪তম মিনিট পর্যন্ত ১-০ গোলে এগিয়ে জার্মানি। এ ম্যাচে জাপান কামব্যাক করবে কে ভেবেছিল? কিন্তু কাতার বিশ্বকাপ যেন চমকের ডালি নিয়ে হাজির হয়েছে। আট মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল আদায় করে নিলো জাপান। দুটি গোলই করেছেন বদলি হিসেবে নামা দুই খেলোয়াড়। তাতেই ইতিহাস। চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন জার্মানিকে ২-১ গোলে হারিয়ে মাঠ ছাড়লো জাপান। গোল করে জয়ের নায়ক রিতসু দুয়ানে, তাকুমা আসানো। তবে জাপানের ঐতিহাসিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন গোলরক্ষক শুইচি গোন্ডাও। ম্যাচে মোট ৮টি সেভ করেছেন তিনি। বিশ্বকাপে জাপানিজ কোনো গোলরক্ষকের পক্ষে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সেভ।

৮ সেভের ৪টিই ছিল ডিবক্সের ভেতর থেকে।গতকাল আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ঠিক একইভাবে পিছিয়ে পড়েও ২-১ গোলে জিতেছিল সৌদি আরব। এশিয়ান দলের বিপক্ষে দুই দিনে দুই পরাশক্তির হার। বিশ্বকাপের ইতিহাসে প্রথমবার ঘটলো এমন ঘটনা।আর জার্মানি বিশ্বকাপে টানা দুই ম্যাচে হারলো এশিয়ান দলের কাছে। গত আসরের শেষ ম্যাচে দক্ষিণ কোরিয়ার কাছে ২-০ গোলে হেরে বাদ পড়েছিল তারা।

ইলকাই গন্ডোয়ানের গোলে প্রথমার্ধে জাপানের বিপক্ষে ১-০ গোলে এগিয়ে ছিল জার্মানি। তবে বদলি নামা খেলোয়াড় রিতসু দুয়ানের গোলে ৭৫তম মিনিটে সমতায় ফেরে এশিয়ান জায়ান্টরা। আর ৮৩তম মিনিটে জাপানকে এগিয়ে দেন আরেক বদলি খেলোয়াড় তাকুমা আসানো।

৩৩তম মিনিটে পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদ করেন ম্যানচেস্টার সিটি তারকা গন্ডোয়ান। যোগ করা সময়ে (৪০+৫ মিনিট) অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায় কাই হাভার্টজের গোল। প্রথমার্ধে মোট ১৪টি শট নিয়েছে জার্মানি। চারটিই ঠেকিয়ে দিয়েছেন জাপান গোলরক্ষক শুইচি গোন্ডা। জাপান শট নিতে পারেনি একটিও। তবে শুরুতে সবচেয়ে ভালো সুযোগটা কিন্তু তারাই পেয়েছিল। 
পঞ্চম মিনিটে ডিবক্স থেকে জার্মানির জালে বল পাঠান জাপানের দাইজেন মায়েদা। কিন্তু শট নেওয়ার সময় অফসাইড পজিশনে থাকায় তার গোলটি বাতিল হয়ে যায়। যে পজিশনে ছিলেন মায়েদা, তাতে ডিবক্সে একটু পরে ঢুকলেও সতীর্থের পাসটা পেতেন তিনি।

তাতে কী, পরে রিতসু দুয়ানে-তাকুমা আসানোরা যা করলেন, জাপানের ফুটবল ইতিহাসেরই সেরা জয়টা উপহার দিলেন তারা। বিশ্বকাপে শিরোপা জয়ী কোনো দলের বিপক্ষে এটি জাপানের প্রথম জয়। এর আগে ২০০২ সালে রাশিয়া ও তিউনিশিয়া, ২০১০ সালে ক্যামেরুন ও ডেনমার্ক এবং গত আসরে কলম্বিয়ার বিপক্ষে জিতেছিল দলটি।

১৬ বছরে সবচেয়ে বাজে শুরু ক্রোয়েশিয়ার
র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের চেয়ে ১০ ধাপ পিছিয়ে থাকা মরক্কোর সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করলো ক্রোয়েশিয়া। বিশ্বকাপে নিজেদের সবশেষ ১২ ম্যাচে প্রথমবার গোল করতে ব্যর্থ হলো তারা। সবশেষ ২০০৬ বিশ্বকাপে জাপানের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল দলটি।  
বর্তমান রানার্সআপ ক্রোয়েশিয়ার সঙ্গে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমান তালে লড়াই করেছে মরক্কো। বল পজেশনে ক্রোয়েশিয়া এগিয়ে থাকলেও বেশি আক্রমণাত্মক মেজাজে দেখা গেছে আফ্রিকান দলটিকে। হাকিম জিয়েশ-আশরাফ হাকিমিরা সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ফল অন্যরকম হতে পারতো। তবে ক্রোয়েশিয়ার মতো দলের বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র নিশ্চিতভাবেই ভালো ফল মরক্কোর জন্য।
উয়েফা নেশনস লীগে সেমিফাইনালে ওঠা ক্রোয়েশিয়াকে এ ম্যাচে একদমই ছাড় দেয়নি মরক্কো। পুরো ম্যাচে মদ্রিচ-পেরিসিচদের নেওয়া পাঁচ শটের দুটি গেছে অন টার্গেটে। আর মরক্কোর আট শটের দুটি ছিল লক্ষ্যে। ১৬টি ফাউল করলেও মাত্র একটি হলুদ কার্ড দেখেছে দলটি।

১১ ফাউল করা ক্রোয়েশিয়ার কেউ অবশ্য বুকড হননি। ম্যাচে পাঁচটি কর্নার পেয়েছিল তারা। সেগুলো কাজে লাগানো যায়নি।প্রথম ৪৫ মিনিটে মরক্কোর গোলমুখে একটি শটও নিতে পারেনি ক্রোয়েশিয়া। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দলকে এগিয়ে নেওয়ার সবচেয়ে ভালো সুযোগটি পেয়েছিলেন নিকোলা ভ্লাসিচ। তবে ছয় গজ থেকে ভ্লাসিচের নেওয়া শট দুর্দান্ত সেভে ঠেকিয়ে দেন মরক্কোর গোলরক্ষক ইয়াসিন বুুনু।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মরক্কোর বুফলের নেওয়া সুফিয়ান বাউফলের দূরপাল্লার শট ব্লক করেন দেয়ান লভরেন। তবে আবার হেড নিয়েছিলেন নুসাইর মাজরাবি। দারুণ সেভে ক্রোয়েশিয়াকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। ৬৪ মিনিটে আরেকটি সেভে জাল অক্ষত রাখেন তিনি। শেষ ১০ মিনিটে গোল করার চাইতে বরং গোল হজম না করার দিকেই মনোযোগী হয় দু’দল। এতে এক পয়েন্ট নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের।

সর্বশেষ