নির্বাচনে আমলারা এবার কি করবেন?

রুমিন ফারহানা
প্রকাশিত: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:০৯
...

প্রশ্ন উঠতে পারে সরকারকে নানান পথে, বিপথে গিয়ে আমলা প্রশাসনের এই যে সহযোগিতা তার বিনিময়ে কি পাচ্ছে তারা? ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতায় রাখার  ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের পুরস্কারস্বরূপ সরকারি চাকরির বেতন স্কেল রাতারাতি দ্বিগুণ করে  দেয়া হয় কয়েক মাসের মধ্যেই। বেতন ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তাদের আছে আরও নানা রকম সুবিধা। আবাসিক সুবিধা, সরকারি প্রাপ্য গাড়ি, বেহিসেবিভাবে প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার, মূল্যের ক্ষুদ্র একটা অংশ পরিশোধ সাপেক্ষে নিজস্ব গাড়ি কেনা, গৃহনির্মাণ ঋণ এবং পেনশন। সর্বোপরি এদেশের সরকারি খাতে দুর্নীতির যে অকল্পনীয় রকম অঙ্কের তথ্য আমরা পাই তাতে এটা নিশ্চিত, বহু সরকারি আমলার কাছে তাদের সার্বিক উপার্জনের তুলনায় চাকরির সব সুযোগ-সুবিধাই তুচ্ছ।  এমনকি টাকা পাচারের তথ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টই বলেছেন আমলারাই এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন সবচেয়ে বেশি।

শরতের ঝকঝকে নীল আকাশ। এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলে দৃষ্টি পিছলে যায়। এর মধ্যেই পেঁজা তুলোর মতো নরম সাদা মেঘের আনাগোনা। গত কয়েকদিনের প্রায় টানা বৃষ্টি ভাদ্র মাসের তালপাকা গরমকেও কাবু করেছিল বেশ খানিকটা। এর মধ্যেই ভাদ্র গিয়ে সবে আশ্বিন এলো। না গরম না ঠাণ্ডার এই সময়টা আমার খুব প্রিয়।

শুনছি উত্তরের কিছু জেলাতে নাকি কাকডাকা ভোরে কুয়াশা নামে, ঘাসে পা ডুবালে হীরকচূর্ণের মতো শিশিরের স্পর্শ পাওয়া যায়। এই মেঘ, তো এই রোদ, আবার এখনই বৃষ্টি। সব মিলিয়ে প্রকৃতিতে অদ্ভুত আলো ছায়ার খেলা।   শহুরে ঘিঞ্জি জীবনে প্রকৃতি বড় কৃপণ। বাড়ির সামনে পা ডোবানোর মতো ঘাস নেই, বাইরে তাকালেই আকাশ দেখার অবারিত সুযোগ নেই। আমার মধ্যবিত্তের ফ্ল্যাট বন্দি জীবনে ছোট্ট বারান্দায় লাগানো সবুজ গাছগুলোই আমাকে ঋতু পরিবর্তনের বার্তা এনে দেয়। চড়ুই পাখির লাফ-ঝাঁপ আমাকে দিন গড়ানোর গল্প শোনায়। চারপাশের বহুতল ভবনগুলোর ফাঁক গলে যে সামান্য এক আধ টুকরো আকাশ আমার ঘরে আসে তার দিকে তাকিয়েই আমি বুঝে নেই মেঘ, বৃষ্টি, আলোর খবর।   এত গেল প্রকৃতি। কিন্তু রাজনীতিতে এখন কোন কাল? দেশের রাজনীতির হালচালইবা কি? নিন্দুকেরা চোখবুজে বলবে ‘আকাল’, তবে আমি কিন্তু রাজনীতির বাতাসে দেখি নির্বাচনের আমেজ। জাতীয় নির্বাচনের বাকি আছে পুরো ১৫ মাস। এর মধ্যেই রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত। প্রধান বিরোধী দলের বক্তব্য খুব পরিষ্কার। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচন হবে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, নতুন নির্বাচন কমিশন দ্বারা। 

ভোট হতে হবে ব্যালটে, ইভিএমে নয়। চেয়ারপারসন সহ বিএনপি’র নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে করা মিথ্যা, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।  দলীয় সরকারের অধীনে যে সুষ্ঠু নির্বাচন হয় না- একথা প্রথম বলেছিল আওয়ামী লীগ ১৯৯৪ সালে। ’৯৪ থেকে ’৯৬ জামাতের সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলন করে, সংসদ বর্জন করে তারা চাপ তৈরি করেছিল সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযোজনের জন্য। হয়েও ছিল তাই। বিএনপি’র হাত দিয়েই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে জায়গা করে নেয়। ’৯০ উত্তর যতগুলো নির্বাচন মোটা দাগে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা পায় তার সবগুলোই হয়েছিল নির্দলীয় সরকারের অধীনে। তারপর তো সব পাল্টেই গেল। যেকোনো প্রকারে জিততে মরিয়া আওয়ামী লীগ তার দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা নিয়ে বদলে ফেললো সংবিধান, বাতিল হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা। এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতি ২০১৪ আর ২০১৮ সালের নির্বাচন। গত ৮-৯ বছর দেশের মানুষ কোনো ভোট দিতে পারে নাই। না জাতীয়, না স্থানীয়। সুতরাং মানুষের মধ্যে একটা মরিয়া ভাব আছে। মানুষের এই মরিয়া ভাবের আর একটি প্রতিফলন হলো শত বাধা উপেক্ষা করে বিএনপি’র সমাবেশে হাজার হাজার মানুষের ঢল। কিন্তু প্রশ্ন হলো মানুষের এই মরিয়া ভাব, তীব্র আকুতি কি পারবে দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে?  একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে মুখ্য ভূমিকা পালন করে নির্বাচনকালীন সরকার, নির্বাচন কমিশন, রাজনৈতিক দলগুলো এবং প্রশাসন। নির্বাচনকালীন সরকার এবং নির্বাচন কমিশন নিয়ে আলাপ হয়েছে এন্তার, আজ একটু দেখা যাক দেশের প্রশাসন কী পরিস্থিতিতে আছে। সেটা বোঝার জন্য অতি সমপ্রতি ঘটা একটি ঘটনার সঙ্গে পুরনো কয়েকটি ঘটনা মিলিয়ে নেয়া যাক।

কয়েকদিন আগে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান সারা দেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে এক সমপ্রীতি সভা চলাকালে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এটিএম পেয়ারুল ইসলাম সেখানে ঢুকে পড়েন। নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি রিটার্নিং কর্মকর্তা ডিসি মমিনুরের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন। এই নির্বাচনে পেয়ারুলসহ তিন জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। মনোনয়ন জমা দেয়ার পর সবাই হাত তুলে মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় ডিসিও নেতাদের সঙ্গে হাত তুলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পেয়ারুলের জয় কামনা করেন। মনোনয়ন জমা দিয়ে নেতারা সমপ্রীতি সভায় বসে পড়েন। সেই সভায় বোমা ফাটান ডিসি মমিনুর। তিনি  বলেন, এখানে আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরের সকল পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত আছেন। কিছু কথা বলি। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সেটা নস্যাৎ করতে দেশি-বিদেশি, আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। ‘আমি মনে করি, বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে যদি থাকে, তাহলে আমাদের দেশে আওয়ামী লীগ বলি, বিএনপি বলি, জামায়াত বলি-সবাই নিরাপদ থাকবে। আমি মনে করি, বিএনপি-জামায়াতেরও এখন দোয়া করা উচিত শেখ হাসিনা যেন আবার ক্ষমতায় আসেন।’ গত বছরের আগস্ট মাস। শেখ কামালের জন্মদিন উপলক্ষে শরীয়তপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় অনুষ্ঠানের মিছিলের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়।

ভিডিওতে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি আক্তার হোসেনকে টি-শার্ট পরিহিত অবস্থায় মোমবাতি হাতে দলীয় স্লোগান দিতে দেখা যায়। ওসি স্লোগান দিচ্ছেন, ‘শুভ শুভ শুভদিন, শেখ কামালের জন্মদিন; জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু; আমরা সবাই মুজিব সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা।’ স্লোগানের সঙ্গে শরীয়তপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ইকবাল হোসেন অপু ও আওয়ামী লীগের নেতারা কণ্ঠ মেলাচ্ছেন। অবিশ্বাস্যভাবে ওসির এই আচরণে ন্যূনতম লজ্জিত হয়নি ক্ষমতাসীন দল, বরং ওসি ক্ষমতাসীনদের এতটাই পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে যে, ওসির এই কাণ্ডের বিরুদ্ধে মন্তব্য করে আওয়ামী যুবলীগের এক সম্পাদক দল থেকেই বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। গত সংসদ নির্বাচনের কয়েকদিন আগে সাতক্ষীরার কলারোয়া থানার ওসি মারুফ আহমেদ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আয়োজিত সমাবেশে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়ে বক্তব্য দিয়েছিলেন। তখন সেটা নিয়েও তোলপাড় হয় সারা দেশে।  এই ঘটনাগুলো প্রকাশ্যে এসেছে। কিন্তু এমন কথা বলা হয় আরও অনেক, কিন্তু ডকুমেন্ট না থাকায় সেগুলো নিয়ে জনপরিসরে আলাপ হয় না। আমরা এটাও নিশ্চয়ই বুঝতে পারি, যারা প্রকাশ্যে এসব বলেন না, তাদেরও প্রায় সবাই আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখার জন্য ভূমিকা পালন করে যান। কারণ আওয়ামী লীগের স্বার্থ আর তাদের স্বার্থ মিলেমিশে একাকার।  

আমরা কথায় কথায় বলি সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী; অথচ আমাদের সংবিধানের কোথাও কিন্তু ‘সরকার কর্মকর্তা’ শব্দ দুটি নেই। সংবিধানে পরিষ্কার বলা হয়েছে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’। অর্থাৎ কর্মকর্তা বলে কোনো শব্দই নেই আমাদের সংবিধানে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদ মন্ত্রিপরিষদ সচিবও সংবিধান অনুসারে একজন কর্মচারীই। এর চাইতেও জরুরি কথা হচ্ছে তারা সবাই সরকারি নয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তারা সকলেই রাষ্ট্রের প্রয়োজনে আইনের অধীনে থেকে রাষ্ট্রের সেবা করবেন। এমনকি রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহীর বেআইনি আদেশ প্রতিপালন করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই কোনো প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীর। সংবিধান নিয়ে নিরপেক্ষভাবে কারও খুব মাথাব্যথা আছে বলে মনে হয় না। সংবিধানের যে যে অনুচ্ছেদ নিজের প্রয়োজন মেটায় সেগুলোকে নিজের মতো করে ব্যবহার করা আর যেগুলো ক্ষমতায় থেকে নিজের মতো যাচ্ছেতাই করতে বাধা তৈরি করে সেগুলোকে দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা নিয়ে বাতিল করাই গত কয়েক বছরের রেওয়াজ। সুতরাং এই বাস্তবতায় দাঁড়িয়ে ‘প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী’ যে ‘সরকারি কর্মকর্তা’ হয়ে যাবেন সে আর তেমন আশ্চর্যের কি আছে? গত এক যুগে বাংলাদেশে বিরাজনীতিকরণে, বিভেদ সৃষ্টিতে এবং ভিন্নমত দমনে, তা সে রাজনৈতিক হোক বা অন্য কিছু, সরকারের মূল হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে পুলিশ প্রশাসন। ঠিক যেভাবে মানুষের ভোটাধিকার হরণ, মানবাধিকার লুণ্ঠন, ন্যায়বিচারের পথ রুদ্ধ করতে সরকারের পাশে সদা প্রস্তুত অবস্থায় পাওয়া গেছে তাদের। গত এক দশক অনির্বাচিতভাবে, অন্যায়ভাবে ক্ষমতায় থাকার ক্ষেত্রে প্রশাসন-পুলিশকে ব্যবহার করতে করতে এ এক নতুন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

প্রশ্ন উঠতে পারে সরকারকে নানান পথে, বিপথে গিয়ে আমলা প্রশাসনের এই যে সহযোগিতা তার বিনিময়ে কি পাচ্ছে তারা? ২০১৪ সালে একতরফা নির্বাচনের মাধ্যমে সরকারকে ক্ষমতায় রাখার  ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ভূমিকা পালনের পুরস্কারস্বরূপ সরকারি চাকরির বেতন স্কেল রাতারাতি দ্বিগুণ করে  দেয়া হয় কয়েক মাসের মধ্যেই।  বেতন ছাড়াও সরকারি কর্মকর্তাদের আছে আরও নানা রকম সুবিধা। আবাসিক সুবিধা, সরকারি প্রাপ্য গাড়ি, বেহিসেবিভাবে প্রকল্পের গাড়ি ব্যবহার, মূল্যের ক্ষুদ্র একটা অংশ পরিশোধ সাপেক্ষে নিজস্ব গাড়ি কেনা, গৃহনির্মাণ ঋণ এবং পেনশন। সর্বোপরি এদেশের সরকারি খাতে দুর্নীতির যে অকল্পনীয় রকম অঙ্কের তথ্য আমরা পাই তাতে এটা নিশ্চিত, বহু সরকারি আমলার কাছে তাদের সার্বিক উপার্জনের তুলনায় চাকরির সব সুযোগ-সুবিধাই তুচ্ছ। এমনকি টাকা পাচারের তথ্য নিয়ে কথা বলতে গিয়েও পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্টই বলেছেন আমলারাই এক্ষেত্রে এগিয়ে আছেন সবচেয়ে বেশি।  এত কিছুও যথেষ্ট নয়, দরকার আরও কিছু। এই সরকারের আমলে আমলাদের জন্য সরকারের উপহার হচ্ছে মাঝেমাঝেই প্রমোদভ্রমণ, যদিও এরও পরে শিক্ষা সফর, প্রশিক্ষণ, সম্মেলনে অংশগ্রহণসহ নানা মোড়ক লাগিয়ে দেয়া হয়। এক হিসাবে  দেখা গেছে, দেশে প্রতিবছর ২০০০ কোটি টাকার বেশি অর্থ খরচ হয় বিদেশে প্রশিক্ষণ এবং সফরের নামে।

অথচ দুর্নীতিপরায়ণতার কথা বাদ দিলেও এই দেশে সরকারি আমলাতন্ত্রের অযোগ্যতা, অদক্ষতা সর্বজনবিদিত। একটি কথা বলে রাখা ভালো; প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারী এমনকি উচ্চপদস্থ কারও আদেশেও যদি কোনো ধরনের বেআইনি কাজ করেন, তবুও তার কৃত বেআইনি কাজের দায়ভার শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিরই হবে। এই সরকারের সময়ে বিশেষ করে গত এক দশকে অসংখ্য প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী দুর্নীতি, নিপীড়নসহ অকল্পনীয় পরিমাণ বেআইনি, অন্যায় কাজ করেছেন। দেশের পরবর্তী কোনো জনগণের সরকার আসলে তার কর্তব্য হবে এসব মানুষকে বিচারের আওতায় আনা।  অর্থাৎ দেশে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে একটি কল্যাণকামী সরকার আসা উচ্চ পদস্থ কর্মচারীদের জন্য দুই ধরনের সংকট তৈরি করবে। প্রথমত তাদের নির্বিচার দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার করার পথে বাধা তৈরি হবে। আর দ্বিতীয়ত তাদের কৃত অপরাধের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। এই পরিস্থিতিতে উচ্চ ক্ষমতাধর মানুষের একটা আলাদা সত্তা, একটা ক্ল্যান তৈরি হয়েছে। তারা তাদের কায়েমী স্বার্থ নিশ্চিতের জন্য নিশ্চয়ই একাট্টা থাকবেন। তারা সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন এই সরকারকেই আবার ক্ষমতায় আনতে। অর্থাৎ এই ক্ল্যানটিকে এখন আর ক্ষমতাসীন দল দ্বারা আদিষ্ট হয়ে নির্বাচনী কারসাজিতে নামতে হবে না, তারা এখন তাদের গোষ্ঠীস্বার্থেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কোমর বেঁধে সব করবেন।

সর্বশেষ