বাংলাদেশে মিয়ানমারের মর্টার শেল কিসের ইঙ্গিত

আহসান হাবিব 
প্রকাশিত: ৫ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:০৯
...

রোহিঙ্গা হলো পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি রাষ্ট্রবিহীন ইন্দো-আর্য জনগোষ্ঠী। ২০১৬-১৭ সালে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের পূর্বে আনুমানিক প্রায় ১৪ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে বসবাস করত। অধিকাংশ রোহিঙ্গা ইসলাম ধর্মের অনুসারী; যদিও কিছু সংখ্যক হিন্দু ধর্মের অনুসারীও রয়েছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সংখ্যালঘু মুসলমান হিসেবে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন বিশ্ব সংবাদমাধ্যমগুলোর শিরোনাম।

রোহিঙ্গাদের আবাসভূমি আরাকান ছিল স্বাধীন রাজ্য। ১৭৮৪ সালে বার্মার রাজা বোডপায়া এটি দখল করে বার্মার অধীন করদ রাজ্যে পরিণত করেন। আরাকান রাজ্যের রাজা বৌদ্ধ হলেও তিনি মুসলমান উপাধি গ্রহণ করতেন। তার মুদ্রাতে ফার্সি ভাষায় লেখা থাকতো কালেমা। আরাকান রাজ দরবারে কাজ করতেন অনেক বাঙালি মুসলমান। বাংলার সাথে আরাকানের ছিল গভীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক। ধারণা করা হয়, রোহিঙ্গা নামটি এসেছে আরাকানের রাজধানীর নাম ম্রোহং থেকে। তবে মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্যে আরাকানকে ডাকা হতো রোসাং নামে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইন রাজ্যে নির্যাতন শুরু করে মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনী। তাদের নির্বিচার হত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের মুখে ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাফ নদী পার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসে আশ্রয় নেয়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মিয়ানমার থেকে আরও কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। বর্তমানে উখিয়া, টেকনাফ এবং ভাসানচরের আশ্রয়শিবিরে নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা সাড়ে ১২ লাখ।

রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার সময় পাঁচ বছর পার হয়ে ছয় বছরে পদার্পণ করল। রোহিঙ্গা সমস্যা এখনো আলোর মুখ দেখছে না। মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি এবং চলমান বৈশ্বিক সংকটের কারণে এখন পর্যন্ত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আদৌ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হবে কিনা তা আমাদের জানা নেই। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাধ্যমে আলোচনা চলছেই। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখানকার সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়। জান্তাবিরোধী তুমুল বিক্ষোভ, প্রতিবাদ ও রক্তপাত মিয়ানমারকে সংঘাতময় পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিয়েছে, চলমান এই পরিস্থিতি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি করলেও বাংলাদেশ বারবার আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্বসম্প্রদায়ের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। কিন্তু কিছু কিছু পশ্চিমা দেশ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। তাদের ছত্রছায়ায় মিয়ানমার নানা ধরনের কার্যকলাপ, নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও অস্থিতিশীলতা জন্ম দিচ্ছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে গত ১৪ জুন পঞ্চম জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের (জেডব্লিউজি) বৈঠকে বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসন শুরুর প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তুলে ধরে দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করা, তাদের নিরাপত্তা, জীবিকা ও কল্যাণ নিশ্চিত করার আহ্বান জানায়। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্যাম্পে অবস্থানকারী রোহিঙ্গারা বিশ্বসম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কর্মসূচির আয়োজন করে। মোটামুটি বলা যায়- রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবসান দ্রুত করার জন্য যখন জোর তৎপরতা চলছে ঠিক তখনই মিয়ানমার থেকে ছোড়া দুটি মর্টার শেল বাংলাদেশের সীমান্তে এসে পড়েছে। সম্প্রতি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু বাজার এলাকায় মর্টার শেল দুটি পড়ে। মর্টার শেলের পর গত ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার পুনরায় বাংলাদেশের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যুদ্ধবিমান থেকে নতুন করে আরও দুটি গোলা বাংলাদেশের অভ্যন্তরে নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত না হওয়ায় হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। অবিস্ফোরিত মর্টার শেল এবং যুদ্ধবিমান থেকে গুলি বাংলাদেশের সীমান্তে এসে পড়ার ঘটনাটি দুর্ঘটনা নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, সেটা খতিয়ে দেখা হবে বলে পররাষ্ট্র সচিবের বরাত দিয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশ হয়েছে। আসলে বাংলাদেশে মিয়ানমারের মর্টার শেল- কিসের ইঙ্গিত।

স্থানীয় প্রশাসন এবং ওই এলাকার বাসিন্দারা বলেছেন- সপ্তাহ দুয়েকের বেশি সময় ধরে সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির লড়াই চলছে। সম্প্রতি দুই পক্ষের মধ্যে তুমুল লড়াই হয়। দুপুরে সীমান্তে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার ও যুদ্ধবিমান চক্কর দিতে দেখা যায়। এরপর বিকেলে বাংলাদেশের সীমান্তের মধ্যে মর্টার শেল পড়ার ঘটনা ঘটে। নাইক্ষ্যংছড়ির ওই সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের। সীমান্তের টহলরত বিজিবি জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে এবং বিজিবি সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। কি কারণে মিয়ানমার হঠাৎ করে বেশ কয়েকদিন ধরে সীমান্তের নোম্যান্স ল্যান্ডের রোহিঙ্গা শিবিরের কাছে এভাবে ফাঁকা গুলিবর্ষণ আর মর্টার শেল নিক্ষেপ করেছে তা এখনো জানা যায়নি।

অন্যদিকে মর্টার শেল পড়ায় এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। শূন্যরেখার দিকে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ৬ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের কোনারপাড়া খালের দক্ষিণে শূন্যরেখার এক খণ্ড জমিতে আশ্রয়শিবির গড়ে তুলে বসতি শুরু করে। সম্প্রতি হঠাৎ করে হেলিকপ্টার থেকে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়া হয়েছে। শূন্যরেখার আশ্রয়শিবিরে রোহিঙ্গাদের ৬২১টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ জন সদস্য রয়েছেন। গোলাগুলির শব্দে তারা আতঙ্কে রয়েছেন।

মিয়ানমার সামরিক বাহিনী কার সঙ্গে কখন যুদ্ধ করবে সেটা বাংলাদেশের কোনো বিষয় নয়। কিন্তু যেকোনো কারণে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে তাদের মর্টার শেল পড়াটা উস্কানিমূলক। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন না করে মর্টার ছোড়া কোনো মতেই শোভনীয় নয়। মিয়ানমার জান্তা সরকার বাংলাদেশ সীমানায় মর্টার শেল ছুড়ে কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছেন। মর্টার তো ঢিল বা পাটকেল নয় যে একদিকে মেরেছিল আরেকদিকে ভুলে এসে পড়েছে। মর্টার ছুড়তে হলে তাকে সামরিক কায়দায় প্রস্তুত করে ছুড়তে হয়। সুতরাং এটা উস্কানিমূলক এটা পরিষ্কার- যেটা মোটেও কাম্য নয়। নাকি বাংলাদেশকে ভয় দেখাচ্ছেন। এই অপকাণ্ড থেকে মিয়ানমারকে বিরত থাকার বিকল্প নেই।

গত ২৫ আগস্ট বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গারা সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছেন। তারা তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাচ্ছে। রোহিঙ্গা নেতারা বলছেন, অন্য দেশে আশ্রিত হয়ে আর কতদিন থাকব? আমরা আমাদের বাপদাদার ভিটা মিয়ানমারে ফিরতে চাই। আমাদের নাগরিক অধিকার দিয়ে সম্মানজনকভাবে ফিরিয়ে নিন। বৃহস্পতিবার সকালে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে মানববন্ধন ও সমাবেশে এসব কথা বলেন রোহিঙ্গা নেতারা।

২০১৭ সালের এই দিনে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণসহ বর্বর নিপীড়নের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গারা। দিনটিকে ‘রোহিঙ্গা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছেন তারা। সমাবেশ ও মানববন্ধন থেকে তারা গণহত্যার বিচার দাবি করেন। ১৩ নম্বর ক্যাম্পের তাজনিমারখোলা খেলার মাঠে আয়োজিত সমাবেশে বি ব্লকের হেডমাঝি মো. ইব্রাহিম, হেড মাঝি মুহাম্মদ আলী ও রোহিঙ্গা নেতা মোজাম্মেল হকসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।

মোজ্জামেল হক বলেন, বাংলাদেশ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। আমরা বাংলাদেশে মিয়ানমারের চেয়ে শতগুণ ভালো আছি- এজন্য আল্লাহর কাছে শোকরিয়া। তবে এভাবে অন্য দেশের আশ্রয়ে কত দিন থাকব? আর দেরি না করে আমরা এবার রোহিঙ্গা পরিচয়ে আমাদের বাপদাদার ভিটামাটি মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাই।

রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার কামাল হোসেন বলেন, ৫ বছর হয়ে গেলেও আমাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে কোনো আগ্রহ দেখায়নি মিয়ানমার। শিগগিরই আমরা নিজ দেশে ফিরতে চাই।

রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, আমরা বিশ্ববাসীর কাছে দাবি জানাচ্ছি, ২০১৭ সালের গণহত্যার বিচার করুন, মা-বোনদের ধর্ষণের বিচার করুন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করুন। আর আমাদের দেশে ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন। সহায়-সম্বল ফিরিয়ে দিন। সমাবেশ থেকে আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার বিচার, নিরাপদ প্রত্যাবাসনের দাবিসহ নানা দাবিতে সোচ্চার ছিলেন রোহিঙ্গা নেতারা। পরে মোনাজাতকালে রোহিঙ্গাদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এছাড়া উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের সুলিমুল্লাহ কাটায় ১৬নং ক্যাম্প, কুতুপালং লম্বাশিয়া, বালুখালী পানবাজার ক্যাম্পসহ অন্তত ২৫টি ক্যাম্পে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গারা। এ সময় তাদের হাতে ‘আমরা রোহিঙ্গা’, ‘আমাদের দেশ মিয়ানমার’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড ছিল। সমাবেশ শেষে পৃথকভাবে মিছিল করে রোহিঙ্গারা। এ সময় তাদের ‘গো ব্যাক হোম’ ও ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে স্লোগান দিতে দেখা যায়।

রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়ার মামলার বিরুদ্ধে যে আপত্তি তুলেছিল মিয়ানমার সেগুলো খারিজ করে দিয়ে মামলা চলার পক্ষে রায় দিয়েছেন জাতিসংঘের সর্বোচ্চ বিচারিক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিস বা আন্তর্জাতিক বিচার আদালত। নিপীড়িত মুসলিম জনগোষ্ঠী রোহিঙ্গাদের সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা নিতে মিয়ানমারকে নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার আদালত (আইসিজে)। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এটি প্রথমবারের মতো কোনো আন্তর্জাতিক রায়। দেশটির বিরুদ্ধে জেনোসাইডের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ অভিযোগ মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি’র বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনা হয়। রোহিঙ্গা হত্যা, গণধর্ষণ, লুটপাটের কারণে শান্তিতে নোবেল পাওয়া অং সান সু চির নোবেল পুরস্কার বাতিল করা হয়।

গণহত্যার অভিযোগে গাম্বিয়া মামলা করার পর অভিযোগ অস্বীকার করার পাশাপাশি কয়েকটি আপত্তি জানিয়েছিল মিয়ানমার সরকার। মিয়ানমারের দাবি ছিল, গাম্বিয়ার এই মামলা করার অধিকার নেই এবং এই আদালতের বিচার করার এখতিয়ার নেই। তবে দীর্ঘ শুনানির পর আদালতের রায়ে মিয়ানমারের সেসব আপত্তি খারিজ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগে যে মামলা করেছে গাম্বিয়া, তার বিচারকার্য অব্যাহত থাকবে। ১৬ সদস্যের আদালতে ১৫-১ ভোটে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ছে। খবর এএফপি ও রয়টার্সের।

বিরোধ মীমাংসায় দ্বিপক্ষীয় কূটনেতিক আলোচনার ব্যর্থতায় এবং মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যথোপযুক্ত আন্তর্জাতিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অভাবে জটিল অবস্থায় পৌঁছেছে। দুই প্রভাবশালী রাষ্ট্র চীন ও রাশিয়া নিরাপত্তা পরিষদে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে চীনের রাজনৈতিক, কূটনৈতিক ও সামরিক পৃষ্ঠপোষকতা মিয়ানমারকে চরম একগুঁয়ে করে তুলেছে। অপর দিকে ভারত তার নিজের স্বার্থে মিয়ানমারকে সমর্থন দিয়ে এসেছে।

মিয়ানমারের নিরাপত্তার অজুহাতে সহিংস ব্যবস্থাকে গ্রহণযোগ্য বলে সাফাই গেয়েছে কেউ কেউ। এ ইস্যুতে ভোট দেওয়ার সময় বিরত থেকে তারা পরোক্ষভাবে মিয়ানমারকে সহায়তা জুগিয়েছে। গণহত্যা হয়েছে এটা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে আইসিজের রায়ে। গণহত্যার মতো একটি জঘন্য অপরাধের বিচার করা জরুরি। যেসব দেশ মিয়ানমারকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সমর্থন করে আসছে তাদের অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ।

রোহিঙ্গাদের কারণে কক্সবাজারে মাদকের আগ্রাসন, চুরি-ডাকাতিসহ সমাজে অপরাধ বেড়েছে। রোহিঙ্গার কারণে স্থানীয় নাগরিকদের রোহিঙ্গা নয় মর্মে প্রত্যয়নপত্র নিতে হয়। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। কক্সবাজারবাসী আজ অতিষ্ঠ। এ থেকে মুক্তির একমাত্র পথ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে কক্সবাজারকে রোহিঙ্গামুক্ত করা। মানবতাবাদী সব মানুষকে সর্বশক্তি নিয়ে এগিয়ে আসার আহবান জানাই। সেই সাথে আমাদের সরকার ও বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আমাদের একান্ত আহবান- রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান করুন।

লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট

সর্বশেষ

সর্বশেষ