নয়াপল্টনে বিএনপি–পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১, রিজভী এ্যানি ও শিমুল বিশ্বাসসহ শতাধিক আটক


প্রকাশিত: ৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৮:১২
...
রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম মকবুল আহমেদ। তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে।ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি হওয়া ব্যক্তির পূর্ণাঙ্গ পরিচয় জানা যায়নি।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, বেলা সাড়ে চারটা পর্যন্ত নয়াপল্টনের সংঘর্ষে আহত আটজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে আনা হয়। তাঁদের মধ্যে মকবুল মারা গেছেন। অন্যদের মধ্যে চারজনের নাম পাওয়া গেছে, তাঁরা হলেন রনি, মনির, আনোয়ার ইকবাল ও খোকন।

রুহুল কবির রিজভীসহ শতাধিক আটক
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীকে আটক করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে পাঁচটার দিকে রিজভীকে নয়াপল্টনের কার্যালয় থেকে আটক করা হয়। রিজভী ছাড়াও বিএনপির শতাধিক নেতা–কর্মীকে আটক করা হয়।

আজ বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত একজন নিহত হয়েছেন। বিকেল সোয়া চারটার দিকে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। তখন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী (এ্যানি) ও বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসকে আটক করে পুলিশ।

আজ সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার এক পাশ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে।

বিএনপির কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান শুরু হলে বেলা সাড়ে চারটার দিকে মির্জা ফখরুল সেখানে আসেন। এ সময় কলাপসিবল গেট বন্ধ করে দেয় পুলিশ। মির্জা ফখরুলকে সেখানে ঢুকতে বাধা দেয় পুলিশ। তিনি কার্যালয়ের সামনে বসে পড়েন। পুলিশের এই অভিযানের এক পর্যায়ে রুহুল কবির রিজভীকে আটক করা হয়।

কেন্দ্রীয় নেতা ছাড়াও শতাধিক নেতা–কর্মীকে পুলিশ আটক করে নিতে দেখা গেছে।আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে ঢাকার বিভাগীয় মহাসমাবেশ করতে চায় বিএনপি। সরকার চায়, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সমাবেশ হোক। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গে বিএনপির কথাবার্তা চলছিল। এরই মধ্যে আজকের সংর্ঘষের ঘটনা ঘটল।

আজ নেতা–কর্মীদের আটকের পর বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে ১০ তারিখের সমাবেশের প্রচারের কাজে থাকা দুটি ট্রাক র‌্যাকার দিয়ে টেনে নিয়ে যায় পুলিশ।ঢাকা মেডিকেল প্রতিনিধি জানান, রক্তাক্ত অবস্থায় মকবুলকে এক ব্যক্তি হাসপাতলে নিয়ে আসেন, যিনি নিজের নাম মোস্তাফিজুর রহমান বলে জানিয়েছেন। ওই ব্যক্তির দাবি, তিনি পথচারী, রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে মকবুলকে তিনি হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

আজ বুধবার বেলা তিনটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। বিকেল সোয়া চারটার দিকে পুলিশ বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে।

এরে আগে সকাল থেকেই নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে দলটির নেতা-কর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। একপর্যায়ে জমায়েত বড় হয়ে রাস্তার এক পাশ বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়। পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে পুলিশ শটগানের গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় অনেকে আহত হন। বিএনপির দাবি, তাদের বেশ কয়েকজনকে পুলিশ আটক করেছে।

ঘটনার সূত্রপাত সম্পর্কে বিকেল চারটায় ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘১০ ডিসেম্বরের সমাবেশ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে আমরা এসেছি। নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে মিছিল করছিলাম। পুলিশ অতর্কিতভাবে দুই দিক থেকে আমাদের ওপর হামলা করে। ছররা গুলি ও কাঁদানের গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এখন আমাদের যাকে যেখানে পাচ্ছে, পুলিশ তুলে নিয়ে যাচ্ছে।’

ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সমাবেশের স্থান নিয়ে যখন আলোচনা চলছে, তখন এই সংঘর্ষ শুরু হলো। আজ পল্টনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে শুরু করে। একপর্যায়ে পুরো রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সরে যেতে বারবার অনুরোধ করি। কিন্তু তারা আমাদের কথা শোনেনি। একপর্যায়ে তাদের সরিয়ে দিতে গেলে তারা পুলিশের ওপর হামলা করে।’

তবে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে বিএনপির নেতা–কর্মীদের ওপর পুলিশের এ গুলি চালানো সম্পূর্ণ পরিকল্পিত।

সর্বশেষ

সর্বশেষ