ডাবলু চৌধুরীর ইতালিতে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবে চাঞ্চল্য


প্রকাশিত: ২২ নভেম্বর ২০২২, ০৮:১১
...

ডাবলু চৌধুরী নামের এক বাংলাদেশির ইতালিতে এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ প্রস্তাবে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তিনি ভেনিসে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির কারখানা স্থাপন করার জন্য এই প্রস্তাব দিয়েছেন। মিলানে অবস্থিত বাংলাদেশ মিশন প্রস্তাবটির পক্ষে ইতালির সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে ইতালির বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। গোটা বিশ্বে ডলারের প্রবল সংকটের মধ্যে ডাবলু চৌধুরীর এই প্রস্তাবে দেখা দিয়েছে ব্যাপক কৌতূহলও।

ডাবলু চৌধুরীর কোম্পানির নাম ইপসিলন মটরস ইঙ্ক যা যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত। তিনি কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হিসাবে ভেনিসের মেয়রের কাছে প্রস্তাবটি পেশ করেছেন। প্রস্তাবের একটি সংক্ষিপ্ত সার যুগান্তরের হাতে পৌঁছেছে। এতে বলা হয়েছে, পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাণের লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ৯২০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে। গাড়ি নির্মাণ কোম্পানিতে এক হাজারের মতো দক্ষ জনবল নিয়োগ করা হবে। কারখানা করার জন্য ভেনিসে ২৫০ হেক্টর ভূমি বিনামূল্যে চাওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রস্তাবে কর সুবিধা ও প্রণোদনা সুবিধা নিয়ে আলোচনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, বিশ্বে প্রথম দিকে যে কয়টি দেশ প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে সই করেছে, তাদের অন্যতম ইতালি। দেশটি ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ৪০ শতাংশ কমাতে বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে বৈদ্যুতিক গাড়ি কারখানা এই অঙ্গীকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। প্রস্তাবে বিষয়টি বিবেচনার অনুরোধ জানানো হয়।

জানতে চাইলে ডাবলু চৌধুরী সোমবার টেলিফোনে যুগান্তরকে বলেন, ‘আমাদের কোম্পানিতে বিএমডব্লিউ কিংবা মার্সিডিসের মতো বড় গাড়ি নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের কারিগরি লোকবল রয়েছে। তারা প্রধানত কারখানার পরিকল্পনা করবেন। পুঁজির জন্য বিশ্বের নামিদামি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের সঙ্গে প্রাথমিক আলাপ হয়েছে। ইতালিতে কারখানা করার অনুমতি পেলে তারা পুঁজি বিনিয়োগ করতে রাজি আছেন।’

সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ কোম্পানিতে ব্যক্তি, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মিলে যে পুঁজির সরবরাহ করে তাকে ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বলা হয়। ডাবলু চৌধুরীর গ্রামের বাড়ি কুষ্টিয়ায়। তবে তিনি দীর্ঘদিন ঢাকায় ছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা, লন্ডন এবং যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন।

ডাবলু চৌধুরী জানান, তাদের প্রযুক্তি এবং ভেঞ্চার ক্যাপিটালের পুঁজি দিয়ে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। বেতন, যন্ত্রপাতিসহ বিভিন্ন ব্যয় যোগ করে তারা ৯২০ মিলিয়ন খরচ বের করেছেন। এটার অর্থ এই নয় যে, তাদের কোম্পানি কোনো অর্থ বিনিয়োগ করবে। বরং যুক্তরাষ্ট্র ও মধ্যপ্রাচ্যের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল তাদের প্রকল্পে অর্থ জোগান দিতে রাজি হয়েছে। একই ধরনের প্রস্তাব কানাডা, পর্তুগাল, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও হাঙ্গেরিতেও দিয়েছেন বলেও জানান ডাবলু চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামী ৫০ বছর সময়ে ধীরে ধীরে অন্য গাড়ির জায়গায় পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক গাড়ি জায়গা নেবে।

ডাবলু চৌধুরীর প্রস্তাব বাস্তবায়নে সহায়তা করছে মিলানে বাংলাদেশের মিশন। জানতে চাইলে মিলানে নিযুক্ত বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল এমজেএইচ জাবেদ যুগান্তরকে বলেন, ‘ডাবলু চৌধুরী আমাদের মাধ্যমে কোনো প্রস্তাব জমা দেননি। তিনি সরাসরি ভেনিসের মেয়রের কাছে প্রস্তাবটি জমা দিয়েছেন। প্রস্তাব জমা দেওয়ার পর তার একটি অনুলিপি আমাদের পাঠিয়েছেন। আমি ভেনিসের মেয়র অফিস পরিদর্শনের সময় প্রস্তাবটি বাস্তবায়নে অগ্রগতি জানতে চেয়েছি।’

সর্বশেষ