চরম আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতি

ডা. জাহেদ উর রহমান
প্রকাশিত: ৯ অক্টোবর ২০২২, ০৯:১০
...

একটার পর একটা ইস্যু এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়, আমরা ভেসে যাই। কিন্তু আমরা অনেকেই খেয়াল করছি না অর্থনৈতিকভাবে এক চরম অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে আমরা যাচ্ছি। একটা মন্দা মানেই অনিশ্চয়তা। দীর্ঘ সময় সঠিক অর্থনৈতিক নীতির মাধ্যমে পরিচালিত দেশের ক্ষেত্রেও এটা সত্য। কিন্তু যদি দেশটি হয় বাংলাদেশের মতো একটি দেশ, যেখানে বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীনরা যাচ্ছেতাই লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিটাকে ভেঙে ফেলেছে, তাহলে সেই দেশের ক্ষেত্রে এই মন্দাজনিত অনিশ্চয়তা কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে কল্পনা করতে পারছি কি আমরা? আতঙ্কে কি শিউরে না উঠছি আমরা?

অর্থনীতিতে মন্দা বলে সাধারণত যে শব্দটি আমরা ব্যবহার করি, সেটির ইংরেজি রিসেশন। আর অর্থনীতির আরও বেশি বড় সংকটটি হচ্ছে ডিপ্রেসন যাকে সম্ভবত বাংলায় মহামন্দা বলা হয়। যাইহোক এই কলামে মন্দা বলতে রিসেশনকে বুঝবো। আগেই বলেছি রিসেশন ডিপ্রেশনের চাইতে তুলনামূলকভাবে কম খারাপ একটি অর্থনৈতিক সংকট। কোন পরিস্থিতিকে মন্দা/রিসেশন বলা হবে, সেটা নিয়ে কিছু মতপার্থক্য থাকলেও মোটামুটিভাবে এই ঐকমত্য আছে যে, কোনো দেশের অর্থনীতি পরপর দু’টি ত্রৈমাসিক প্রান্তিকে যদি ঋণাত্মক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে তাহলে সেই অর্থনীতি মন্দাক্রান্ত হয়েছে বলা যাবে। অর্থাৎ পরপর দু’টি প্রান্তিকে কোনো দেশের মোট জিডিপি যদি কমে যায় তাহলে সেটাকে মন্দা বলবো।

পৃথিবীতে একটি মন্দা আসন্ন, কয়েক মাস আগে থেকেই এমন একটা ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন অনেকেই। এদের মধ্যে একজনের কথা আলাদাভাবেই বলতে হয়। তিনি হলেন, বিশ্বখ্যাত অর্থনীতিবিদ নরিয়েল রুবিনি। অর্থনীতিতে সুস্পষ্ট ভবিষ্যদ্বাণী করা ভীষণ কঠিন একটা ব্যাপার, কিন্তু এই কঠিন কাজটি করার ব্যাপারেই বেশ সুনাম অর্জন করেছেন এই অর্থনীতিবিদ। ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ধস নিয়ে আগাম মন্তব্য করেছিলেন হাতেগোনা যে কয়েকজন অর্থনীতিবিদ, তাদের মধ্যে তিনি আছেন। এই রুবিনি কয়েক মাস আগে প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে একটি কলাম লিখে স্পষ্টভাবে দাবি করেছিলেন, একটা অর্থনৈতিক মন্দা ছাড়া বিদ্যমান মূল্যস্ফীতি শেষ হচ্ছে না।

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের আগে থেকেই আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলোতে অত্যন্ত উচ্চমাত্রার মূল্যস্ফীতি ছিল। এই মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ ছিল করোনা। করোনার সময় পশ্চিমা দেশগুলো অর্থনৈতিক সংকট কাটানোর জন্য নাগরিকদের হাতে অনেক বেশি পরিমাণ অর্থ সরবরাহ করেছিল। কোনো কোনো দেশ নাগরিকদের একেবারে নগদ অর্থ দিয়েছিল যাতে সেই অর্থ বাজারে খরচ হওয়ার মাধ্যমে বাজারে চাহিদা তৈরি করে, যে চাহিদার ভিত্তিতে আবার যোগান তৈরি করার জন্য পণ্য এবং সেবা উৎপাদন বাড়বে যা শেষ পর্যন্ত মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। বলাবাহুল্য সেই কর্মসংস্থান বাজারে আরও নতুন পণ্য এবং সেবার চাহিদা তৈরি করবে, এভাবেই এই চক্রটি বড় হতে থাকে। এভাবেই মানুষের হাতে সহজে টাকা তুলে দিলে সেটি অর্থনীতির চাকাকে সজোরে ঘুরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু মানুষের হাতে অনেক বেশিই টাকা চলে যাওয়ার ঝুঁকি হচ্ছে এটা বাজারে মূল্যস্ফীতি তৈরি করে। ওদিকে করোনাকালীন সময়ে বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা চরমভাবে বিপর্যস্ত হওয়ার কারণে পণ্য উৎপাদনের মূল্য বেড়ে গিয়েছিল। এই দুই ঘটনার প্রভাবে মূল্যস্ফীতি ইতিহাসের সর্বোচ্চ পর্যায়ে চলে গেছে ইউরোপ এবং আমেরিকায়।

মূল্যস্ফীতির বাড়বাড়ন্তের এই পরিস্থিতিটা ছিল দীর্ঘদিন থেকেই। কিন্তু ইউক্রেন আগ্রাসনের পর সেটা আরও বেড়েছে। এই সংকটের কারণে প্রাথমিক জ্বালানি তেল এবং গ্যাসের দাম অনেক বেশি বেড়ে গেছে। আর সবাই জানেন প্রাথমিক জালানির মূল্য বৃদ্ধি উস্কে দেয় পুরো উৎপাদন ব্যবস্থার মূল্য বৃদ্ধিকে। সার্বিক পরিস্থিতিতে আমেরিকার ফেডারেল রিজার্ভ এবং ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদের হার বৃদ্ধি করেছে। তাদের উদ্দেশ্য এতে মানুষের সঞ্চয়ের প্রবণতা বাড়বে এবং ঋণ ব্যয়বহুল হবে। এতে বাজারে মুদ্রা সরবরাহ কমে যাবে। এই পদক্ষেপ মূল্যস্ফীতি কতটা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারবে সেটা নিয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে বিতর্ক আছে। কারণ এই মুহূর্তের যে মূল্যস্ফীতি সেটা শুধু টাকার সরবরাহ বৃদ্ধিজনিত (অর্থনীতির ভাষায় ‘ডিমান্ড পুল্ড’) নয়, এর সঙ্গে আছে সরবরাহ সংকটজনিত (অর্থনীতির ভাষায় ‘কস্ট পুশড’) মূল্যস্ফীতি। মুদ্রা সরবরাহ কমানো কস্ট পুশড মূল্যস্ফীতির ওপরে প্রভাব খুব একটা পড়ে না। যাইহোক এই পদক্ষেপের মাধ্যমে মুদ্রাস্ফীতি অনেকটা কমবে তো নিশ্চয়ই। সমস্যা হচ্ছে সুদের হার যখন বেড়ে যায় তখন ঋণের সুদ বেড়ে যাওয়ার কারণে বিনিয়োগের জন্য প্রাপ্ত অর্থ দুর্লভ হতে শুরু করে। বেশি সুদে টাকা নিয়ে বিনিয়োগ করে সেটা ব্যবসা প্রসারের জন্য খুব ভালো কিছু হয় না। আর শিল্প ব্যবসা-বাণিজ্য যদি কম চলে তাহলে অনিবার্যভাবেই তৈরি হবে মন্দা।

পশ্চিমা দেশগুলোতে ঠিক এই ঘটনাটিই ঘটছে এখন। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ এর পক্ষ থেকে মন্দার ব্যাপারে নিয়মিত পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছিল। সম্প্রতি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) বিশ্বের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রধান অর্থনীতিবিদদের নিয়ে মতামত জরিপ করেছে। সেখানে ৭৩ শতাংশ অর্থনীতিবিদ মত দিয়েছেন, ২০২৩ সালে মন্দা হতে পারে। রুবিনি সম্প্রতি আবার দাবি করেছেন, ২০০৮ সালের আর্থিক বিপর্যয়ের চেয়েও আরও ভয়াবহ অর্থনৈতিক মন্দার সম্মুখীন হতে চলেছে বিশ্ব। চলতি বছরের শেষ প্রান্তেই তা আছড়ে পড়তে পারে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর দাবি, শুধু যুক্তরাষ্ট্রে নয়, ২০২২ সালের শেষদিকে সারা বিশ্বে আছড়ে পড়তে চলেছে এই মন্দা, যা স্থায়ী হতে পারে ২০২৩ সাল পর্যন্ত। এই ব্যাপারে আলোচনা আর না বাড়িয়ে আমরা এই সিদ্ধান্তে নিশ্চয় আসতে পারছি বিশ্ব একটা মন্দায় ঢুকে যাচ্ছে এই নিয়ে বিতর্ক নেই, বিতর্ক হতে পারে সেই মন্দার স্থায়িত্ব এবং তীব্রতা কতটা হতে পারে। প্রশ্ন হচ্ছে এই মন্দা বাংলাদেশকে কোন দিক থেকে কতটা প্রভাবিত করতে পারে। প্রাথমিকভাবে এটা দেখা যায়, যখনই একটা বৈশ্বিক মন্দা শুরু হয় তখন তেল-গ্যাসের মতো জীবাশ্ম জ্বালানির মূল্য কমতে শুরু করে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড শ্লথ হয়ে পড়া মানে জ্বালানির প্রয়োজন কমে যাওয়া এটুকু আমরা বুঝি নিশ্চয়ই। বরাবরের মতোই এবারকার মন্দায় তেলের মূল্য কমতে শুরু করেছে। কিন্তু মোটামুটি নিশ্চিতভাবেই বলা যায় এবার অন্যান্য বারের মতো গ্যাসের মূল্য খুব একটা কমছে না। কারণ পুতিনের ইউক্রেন আগ্রাসনের পর থেকে ইউরোপ রাশিয়ার উপরে গ্যাস নির্ভরতা খুব দ্রুত কমিয়ে আনছে। এই কারণে ইউরোপ আমেরিকা নরওয়ে তো বটেই মধ্যপ্রাচ্য থেকেও বিশাল পরিমাণে তরলিকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) কিনেছে। ফলে মন্দা থাকলেও বহুদিন বিশ্বে এলএনজি’র আকাশচুম্বী মূল্য থাকবেই।

তাহলে জ্বালানির ক্ষেত্রে সরকার তেলের মূল্য কমাজনিত প্রাথমিক একটা সুবিধা পাবে- এটা যৌক্তিক। কিন্তু গ্যাসের সংকট আরও বহুদিন থেকে যাবেই। জ্বালানির মূল্য কমে যাওয়া সরকারকে সুবিধাজনক অবস্থায় রাখবে। শুধু সেটা নয়, জ্বালানির মূল্য কমে যাওয়া মানে বৈশ্বিকভাবে পণ্য এবং সেবার উৎপাদন মূল্য কমে যাওয়া। এর সঙ্গে মন্দা জড়িত চাহিদার হ্রাস যদি যুক্ত করি তাহলে আমরা বুঝবো বাংলাদেশের বহু আমদানিকৃত পণ্যেরও দাম কমে আসবে। কিন্তু সেই পণ্যমূল্য কমার সুবিধা এদেশের জনগণ পাবে না, হাতেগোনা কিছু আমদানিকারক বিরাট ব্যবসায়ী পাবে, সেটা অবশ্য ভিন্ন আলোচনা।

মন্দা এই ধরনের কিছু সুবিধা দিলেও আমাদের বিরাট ক্ষতি করবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের প্রধান দুই খাত হচ্ছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এবং গার্মেন্ট রপ্তানি। আমাদের গার্মেন্ট রপ্তানির প্রধান গন্তব্য ইউরোপ আমেরিকায় মন্দায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে যাচ্ছে। ফলে মন্দায় মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে আমাদের রপ্তানি কমে যাবে এটা নিশ্চিত। মন্দা পুরোপুরি শুরু হওয়ার আগেই এর মধ্যেই এই ক্ষেত্রে আমাদের সামনে দুঃসংবাদ এসেছে। সেপ্টেম্বরে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় পণ্য রপ্তানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ। টানা ১৩ মাস বাড়তির ধারায় থাকার পর রপ্তানি আয় কমলো। ওদিকে গার্মেন্ট মালিকরা জানিয়েছেন তাদের অর্ডার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ কমে গেছে। অর্থাৎ রপ্তানি ভবিষ্যতে আরও কমে যাবে। ওদিকে ইউরোপ- আমেরিকায় মন্দার কারণে জীবনযাত্রার ব্যয় যেহেতু বেড়ে গেছে, সেসব দেশে বসবাসকারী বাংলাদেশিদের জীবনযাপনের জন্য অতিরিক্ত খরচ করতে হবে তাই তাদের পক্ষে দেশে অর্থ পাঠানো কমে যাবে। রেমিট্যান্স এর আরেকটি বড় প্রভাব পড়বে মধ্যপ্রাচ্যে। তেল-নির্ভর অর্থনীতিগুলো তেলের মূল্য কমাজনিত কারণে সংকটে পড়বে ফলে সেসব দেশের কাজে নিযুক্ত বাংলাদেশি কর্মীরা অনেকেই চাকরি হারাবেন কিংবা চাকরি ধরে রাখতে পারলেও বেতন কমে যাবে। ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ নিশ্চিতভাবে কমবে। এই প্রবণতা শুরু হয়ে গেছে এরই মধ্যে। সেপ্টেম্বরে যে পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে, তা বিগত সাত মাসের মধ্যে সর্বনিম্নœ। এই আয় আগের মাসের (আগস্ট) তুলনায় ২৪ শতাংশ কমেছে।

গত বছরের একই মাসের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যাবে, কমার হার প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ। পরিস্থিতি নিশ্চিতভাবেই আরও অনেক খারাপের দিকে যাবে। অর্থাৎ মন্দাজনিত কারণে সরকার যতটা সুবিধা পাবে ক্ষতির সম্মুখীন হবে তার চাইতে অনেক বেশি। আর এই ঘটনাটা ঘটছে এমন এক সময়ে যখন বাংলাদেশ তার লেনদেনের ভারসাম্যে খুব খারাপ সময় পার করছে। বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়ার মাধ্যমে আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে সেটা কমানো গেলেও বাণিজ্য ঘাটতি খুব বেশি কমছে না। অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে লেনদেনের ভারসাম্যে ঘাটতি হয়েছে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারের বেশি। কারণ আগে করা বেশকিছু এলসি যেগুলোর পেমেন্ট পিছিয়ে দেয়া হয়েছিল, সেগুলোর নিষ্পত্তি এখন করতে হচ্ছে। এই মুহূর্তে ডলারের অনেক উচ্চমূল্য হলেও রপ্তানি আয়ের ক্ষেত্রে সেটা অনেকটা কম রাখার কারণে বহু রপ্তানিকারক রপ্তানি আয় দেশে আনছেন না এটা ভাবার যৌক্তিক কারণ আছে। এই পরিস্থিতি ঘটছে এমন সময় যখন বাংলাদেশের রিজার্ভ অত্যন্ত নাজুক পর্যায়ে আছে। কাগজে-কলমে এটা এখন ৩৬ বিলিয়ন ডলারের মতো হলেও বাস্তবে এটা আসলে ২৫ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ঋণসহ আরও কিছু ক্ষেত্রে রিজার্ভ থেকে বরাদ্দ করা নোট ৯ বিলিয়ন ডলারের মতো অর্থ ‘চাহিবামাত্র’ বাংলাদেশ ব্যাংক হাতে পাচ্ছে না এটা নিশ্চিত। অর্থাৎ সামনে ডলারের মূল্য পতন খুব দ্রুত হতে পারে। আর ডলারের মূল্য পতন মানেই হচ্ছে বৈশ্বিকভাবে পণ্যমূল্য যদি কমেও সেটার কোনো সুফল দেশের মানুষ পাবে না বরং সেটা আরও বেড়ে যেতে পারে। আর বাংলাদেশের মতো একটা দেশে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকা কিছু ব্যবসায়ী এই পরিস্থিতিতে জনগণের জীবনে অবিশ্বাস তুলে বানিয়ে নেবেন মোটা টাকা।

এই পরিস্থিতির সঙ্গে যোগ করা যাক বাংলাদেশের খাদ্য উৎপাদন কমে যাওয়াকে। অত্যন্ত কম বৃষ্টি হওয়ার কারণে এবার আউশের ফলন ভালো হবে না, এই পূর্বাভাস রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে থেকে দেয়া হয়েছে। সরকার চাল আমদানির অনুমতি দিলেও ব্যবসায়ীরা নানা ব্যবসা হিসাব-নিকাশ থেকে চাল আমদানি করছেন না।

নানা ডামাডোলে আমরা ব্যস্ত হয়ে থাকি। একটার পর একটা ইস্যু এসে আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যায়, আমরা ভেসে যাই। কিন্তু আমরা অনেকেই খেয়াল করছি না অর্থনৈতিকভাবে এক চরম অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে আমরা যাচ্ছি। একটা মন্দা মানেই অনিশ্চয়তা। দীর্ঘ সময় সঠিক অর্থনৈতিক নীতির মাধ্যমে পরিচালিত দেশের ক্ষেত্রেও এটা সত্য। কিন্তু যদি দেশটি হয় বাংলাদেশের মতো একটি দেশ, যেখানে বছরের পর বছর ধরে ক্ষমতাসীনরা যাচ্ছেতাই লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিটাকে ভেঙে ফেলেছে, তাহলে সেই দেশের ক্ষেত্রে এই মন্দাজনিত অনিশ্চয়তা কোথায় গিয়ে ঠেকতে পারে কল্পনা করতে পারছি কি আমরা? আতঙ্কে কি শিউরে না উঠছি আমরা?

সর্বশেষ